আমরা যখন হেরেম শরীফের আশপাশে ঘোরাফেরা করেছি, নামায আদায় করেছি, কেনাকাটা করেছি তখন কাবা শরীফের জাস্ট বাইরের যে চত্বর সেখানে দেখেছি অসংখ্য কবুতর ঘোরাফেরা করে। কবুতর গুলোকে মুসল্লীরা গম এবং অন্যন্য বিভিন্ন ধরনের খাবার দিয়ে থাকে। কবুতরগুলি সে খাবার খায় এবং এখানেই ম্যাক্সিমাম সময় অবস্থান করে।

শুধুমাত্র কবুতরের নিরাপত্তা এবং ভালোভাবে থাকার জন্য সেখানে কিছু স্পেশাল টাইপের তাঁবুর ব্যবস্থা করা হয়েছে। এগুলো মসজিদ আল-হারম এর বাহিরেই অবস্থিত। আবার প্রধান গেটের বাইরে চত্তরে যেখানে ৫ ওয়াক্ত জামাতে মুসল্লী ও হাজী সাহেবরা নামায আদায় করে সেই জায়গাগুলিতে এই অসংখ্য কবুতর দেখা যায়।

তবে এই কবুতরগুলি কে কেন্দ্র করে বিভিন্ন ধরনের জনশ্রুতি আছে যেমন কেউ মনে করেন যে, এই কবুতর বিশেষ ক্ষমতার অধিকারী। কবুতরের ফেলে দেয়া খাবার খেলে বিভিন্ন রোগ ভালো হয়, বিভিন্ন নিয়তে খেলে বা সেটা ব্যবহার করলে তার আশা পূরণ হয়।


কেউ বলেন যে মক্কার এই কবুতরের খাবার খেলে সন্তান হয়। আসলে এই বিষয়গুলি সবই গুজব এবং অসত্য কথা। তবে এটা ঠিক যে, মক্কার যে হারাম এরিয়া এই এরিয়ার মধ্যে কোন ধরনের জীবজন্তু হত্যা করা হয় না বিধায় এখানে এই কবুতর গুলি কে হত্যা করা হয় না বরং তাদেরকে পরম যত্নে রাখা হয় এবং খাদ্য খাবার দেওয়া হয়।

আরো একটা জনশ্রুতি আছে যে মক্কার কাবা শরীফের উপর দিয়ে কখনো কোন প্রাণী উড়ে যায় না, বা বিমান চলে না আসলে এগুলো সবই কল্পকাহিনী বা গুজব।

বিমান চলার একটা নির্দিষ্ট রুট থাকে বিধায় ওই নির্দিষ্ট রুটের বাহিরে বিমান চলাচল করতে পারে না। সুতরাং সৌদি কর্তৃপক্ষ যেহেতু কাবার উপর দিয়ে চলার মত বিমানের কোন রুট রাখে নাই, তাই বিমান চলে না। কিন্তু আমি নিজে সেখানে অবস্থান করার সময় লক্ষ্য করেছি এবং ভালভাবে লক্ষ্য করেছি যে কবুতর ও অন্যান্য পাখি ছাড়াও প্রজাপতি কাবা শরীফ এর উপর দিয়ে উড়ে যায়। এমনও দেখেছি যে কাবার গিলাফের উপর ছোট বড় বিভিন্ন ধরনের প্রজাপতি পোকামাকড় এখানে এসে পড়ে এবং সেখানে এই প্রজাপতি এবং পোকামাকড় তাড়ানোর জন্য সবসময়ই পরিচ্ছন্নতাকর্মী নিয়োজিত থাকে।

তারা এই ছোট বড় প্রাণী গুলি করে হত্যা করে না জাস্ট একটা কিছু দিয়ে ওখান থেকে দূরে সরিয়ে দেয়। যাহোক, মক্কার কবুতর সম্বন্ধে আলোচনা যাই থাকুক না কেনএই কবুতরের বিশেষ কোনো ক্ষমতা নেই। এটার উচ্ছিষ্ট খাবার খেলে বা ব্যবহার করলে আপনি উপকৃত হবেন, কোন রোগ সেরে যাবে, নিয়ত পূরণ হবে এসব কথা সত্য না।
তবে মক্কা, মদিনা তথা সৌদি আরব একটি শুষ্ক আবহাওয়ার পরিচ্ছন্ন দেশ যেখানে অসংখ্য কবুতর দেখা যায়। সৌদি আরবের যেসব জায়গাতে আমি গিয়েছি, হেরা পর্বত সহ অন্যান্য স্থানে গিয়েছি সব জায়গাতেই অসংখ্য কবুতর আমি দেখেছি।