Hand Foot and Mouth Disease এর লক্ষন ও প্রতিকার, হ্যান্ড ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজিজ

Hand Foot and Mouth Disease এর লক্ষন ও প্রতিকার, হ্যান্ড ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজিজ

ভ্রমণ বাংলা No Comments

হ্যান্ড ফুট অ্যান্ড মাউথ রোগ বাংলাদেশে খুব প্রচলিত না হলেও ইদানীং বেশ দেখা যাচ্ছে বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসকেরা। রোগটি আগের চেয়ে বেশ বেশীই দেখা যাচ্ছে। সচেতনতার জন্য আসুন জেনে নিই এই Hand Foot and Mouth Disease সম্পর্কেঃ

এই রোগ মূলত শিশুদের হলেও বড়রাও আক্রান্ত হতে পারে।

হ্যান্ড ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজিজের লক্ষণঃ

  • প্রথমে কমবেশী ১০০ ডিগ্রী ফারেনেহাইট তাপমাত্রার জ্বর হতে পারে,
  • প্রথমে হাত পা বা মুখে কয়েকটি ফুসকুড়ি টাইপের দেখা দেয়। দ্রুত সংখ্যা বাড়তে থাকে এবং বড় হতে থাকে,
  • রোগটির লক্ষনে জল বসন্তের সাথে খানকিটা মিল আছে। এই মিল থাকার কারণে অভিভাবক,
  • এমনকি বাংলাদেশের চিকিৎসকেরাও ভুল করে থাকেন,
  • হাত পায়ের জয়েন্ট এলাকায় বেশী হয়,
  • মুখের ভিতরে, বাইরে এমনকি জিহবাতেও ফুসকুড়ি দেখা দেয়,
  • তীব্র নয় তবে ব্যাথা থাকে,
  • গলা ব্যথা, জ্বর এবং খাবারে অরুচি,
  • কয়েকদিন পর মুখ ও জিহ্বায় পুঁজযুক্ত ঘায়ের মত ফুসকুড়ি হয়।

জলবসন্তের সাথে পার্থক্য বুঝবেন কিভাবে?

ডাঃ রওনক জাহান যিনি BSMMU (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়) এর শিশু বিশেষজ্ঞ, বলেন, হ্যান্ড ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজিজ এবং জলবসন্ত দুটোই ভাইরাসজনিত অসুখ। এই অসুখে হাতে এবং পায়ে ত্বকের রঙ অনুযায়ী গোলাপি, লাল অথবা কাল রঙের উঁচু গোটা দেখা দেয়। পরে তা পানিযুক্ত ফুসকুড়ির মতো হয়ে ওঠে। মূলত হাত, পা ও জিহবাতেই এই ফুসকুড়ি দেখা দেয় তবে শরীরের অন্যান্য স্থানেও দেখা যেতে পারে।

৫ বেছরের শিশুদের বেশী হয় এবং একই শিশুর একাধিক বার এই রোগ হতে পারে তবে জল বসন্ত ষাধরনত একজনের এক বারই হয়ে থাকে।

আর জলবসন্ত রোগের ক্ষেত্রে জ্বরের সাথে শরীরে বেশ ব্যথা হয়। এর ৩-৪ দিন পর গোটা দেখা দেয়। তবে শুধু হাত বা পায়ে নয়, সারা শরীরে ফোসকা হতে পারে, শরীরের যেকোনো স্থানে হতে পারে।

জলবসন্তে ফোসকার ভিতরে তরল থাকে আর হ্যান্ড ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজিজের ক্ষেত্রে ফোসকার ভিতরে পুজ থাকে।

জল বসন্তের ফোসকায় বেশ চুলকায় আর হ্যান্ড ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজিজের ক্ষেত্রে ব্যাথা থাকে।

hand foot mouth disease on tongue
জিহবার ফোসকা

USA এর Center for Disease Control CDC এর মতে এই রোগ ছোয়াচে এবং এক সপ্তাহের মধ্যে বেশী ছড়ায়।

এই হ্যান্ড ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজিজ কিভাবে ছড়াতে পারেঃ

  • সরাসরি রোগীর শরীরের সংস্পর্শ হতে,
  • আক্রান্ত শিশুর গোটা থেকে বের হওয়া তরল পদার্থ এর মাধ্যমে,
  • হাঁচি ও কাশির মাধ্যমে, মুখের লালা,
  • সর্দি এমনকি মলের মাধ্যমে এর সংক্রমণ হতে পারে।

কোন সময় এই রোগ হতে পারে?

ডা. রওনক জাহান বলেন, বর্ষাকালে এই রোগ বাংলাদেশে বেশী হতে পারে তবে বর্তমানে বাংলাদেশে বর্ষার শেষে শীতের আগেও এই রোগের প্রদুর্ভাব দেখা যাচ্ছে । তিনি আরও বলেন, ‘ফুট অ্যান্ড মাউথ’ নামে গরুর একটি রোগ রয়েচে তবে এটা আর শিশুদের হ্যান্ড ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজিজ এক নয়।

হ্যান্ড ফুট অ্যান্ড মাউথ রোগের চিকিৎসা কি?

National Health Services (NHS, UK) এর মতে এই অসুখের কোন অ্যান্টিবায়োটিক অথবা ঔষধ নেই। তবে,

  • সাত থেকে দশ দিনের মধ্যে অসুখটি সাধারণত সেরে যায়,
  • আক্রান্ত হলে এই সময় প্রচুর পরিমাণে পানি খেতে বলেন চিকিৎসকেরা,
  • কিন্তু ফলের জুস খেতে নিষেধ করেন,
  • জাল মসলা মুক্ত নরম খাবার খেতে হবে,
  • ঔষধ হিসেবে শুধু প্যারাসিটামল সেবন করতে হবে।
Hand Foot and Mouth Disease Affected Knee
Hand Foot and Mouth Disease Affected Knee

কখন ডাক্তারের শরণাপন্ন হবেন

National Health Services (NHS, UK) এর তথ্য মতে হ্যান্ড ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজিজ হওয়ার পর

  • শিশুর শরীর যদি পানিশূন্য হয়ে পড়ে,
  • উচ্চ তাপমাত্রায় জ্বর হয়, জ্বরের সময় শীত লাগে,
  • যদি ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে লক্ষণ ভালো না হয়,
  • আর গর্ভবতী অবস্থায় কেউ এতে আক্রান্ত হলে অবশ্যই ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে।

বিশেষ নোটঃ এই পোষ্ট শুধুমাত্র কোমলমতি শিশুদের নতুন ধরনের হাত পা ও মুখ সংক্রান্ত রোগের প্রাতমিক ধারনা ও সচেতনতা তৈরীর জন্য। এটি কোন চিকিৎসার জন্য নয়।

তথ্য সুত্র: বিবিসি বাংলা

Categories
Health